বর্তমানে সারা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের বিভিন্ন সার্ভারে কয়েক মিলিয়ন ওয়েব সাইট সংরক্ষিত আছে। HTML এর সাহায্যে ওয়েবে তথ্য প্রকাশ করা হয়। এইচটিএমএল দিয়ে মূলত ডকুমেন্টের স্ট্রাকচার নির্দেশ করে। এতে থাকে ব্রাউজার কীভাবে বিভিন্ন অংশকে প্রদর্শন করবে তার নির্দেশ। HTML এর বিভিন্ন নির্দেশকে বলা হয় ট্যাগ। তাই ওয়েব সাইটের বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন এবং ওয়েব সাইট ডিজাইনের জন্য ” HTML কি ” জানতে হবে। ” HTML কি ” জানার পাশাপাশি আমাদের আরও জানতে হবে HTML এর ট্যাগ সমূহ এবং এর মৌলিক বিষয় সমূহ সম্পর্কে। আজকের আর্টিকেলে HTML কি , HTML আবিষ্কার এবং HTML এর সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
HTML কি
HTML এর পূর্ণরূপ হলো Hyper Text Markup Language । ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (World Wide Web: WWW) ডকুমেন্টের বিভিন্ন ধরনের উপাদান ও উপকরণ তৈরি করা, ব্রাউজারে তথ্য প্রদর্শন বা ওয়েব পেজে তথ্য উপস্থাপন ও ফরমেট করতে যে ল্যাংগুয়েজটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় তা হলো HTML । এইচটিএমএল ল্যাংগুয়েজটি ব্যবহার করে প্রোগ্রামাররা ওয়েব পেজে লেখা, অডিও, ভিডিও, স্থির চিত্র, অ্যানিমেশন ইত্যাদি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন। এটি ভিজুয়াল বেসিক C++ এর মত কোন প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ নয়। এটি এক ধরনের Script ল্যাংগুয়েজ। এধরনের ল্যাংগুয়েজ ব্যবহার করে মূলত ডকুমেন্টের স্ট্রাকচার নির্দেশ করে। এতে থাকে ব্রাউজার কিভাবে বিভিন্ন অংশকে প্রদর্শন করবে তার নির্দেশ। এটি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ থেকে অনেক সহজ।
এইচটিএমএল কার্যকরভাবে প্লাটফর্ম স্বনির্ভর (Platform Independent) সমন্বয়। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (WWW) ডকুমেন্টের বিভিন্ন ধরনের উপাদান ক উপকরণ তৈরি করা যায় এর সমন্বয়ের মাধ্যমে।
HTML আবিষ্কার
এটি একটি বহুমুখী (Versatile) ল্যাংগুয়েজ। HTML হচ্ছে SGML (Standard Generalized Markup Language) এর উন্নত সংস্করণ। ১১৯০ সালে জেনেভার Cern-এ কাজ করার সময় টিম বার্নাস-লী সর্বপ্রথম HTML আবিষ্কার করেন। W3C কর্তৃক প্রথম ডেভলপকৃত HTML 3.0 প্রকাশিত হয় ১৯৯৭ সালের জানুয়ারিতে। একই বছরের শেষ ডিসেম্বরে W3C HTML এর নতুন সংস্করণ HTML 4.2 প্রকাশ করে। বর্তমানে HTML সর্বশেষ সংস্করণ হচ্ছে HTML 5 ।
HTML এর মৌলিক বিষয় সমূহ
যে কোন ধরনের টেক্সট এডিটর ব্যবহার করে এইচটিএমএল ডকুমেন্ট তৈরি করা হয়। এসব টেক্সট এডিটরে ওয়েব পেজের জন্য নিয়ম মাফিক লিখিত টেক্সট ফাইল-ই হলো এইচটিএমএল ডকুমেন্ট। এইচটিএমএল ডকুমেন্ট তৈরির জন্য সাধারণত যেসব টেক্সট এডিটর ব্যবহৃত হয় তা হলো- উইন্ডোজের (যেমন Notepad, Wordpad, Fornt Page ইত্যাদি), ম্যাকিন্টোশের Simple Text বা ইউম্যাক্স মেশিনের Emacs ইত্যাদি। টেক্সট এডিটর এইচটিএমএল ডকুমেন্ট তৈরি করার পর ফাইলটি .htm বা .html বর্ধিতাংশে লিখে একটি নির্দিষ্ট ফোল্ডারে সংরক্ষণ করতে হবে। যেমন
নোটপ্যাড প্রোগ্রাম ব্যবহার করে নিচের মত করে কোড লিখতে হবে-
<html> <head> <title> Title of page </title> </head> <body> We are professional SEO expert </body> </html> |
এরপর একটি ব্রাউজিং সফটওয়্যার (Google Chorme OR Mozilla Firefox) ব্যবহার করে ঐ নির্দিষ্ট ফোল্ডার থেকে ফাইলটি ওপেন করলেই পেজটির আউটপুট দেখা যাবে।
এইচটিএমএল এর ফর্মের সাহায্যে ব্যবহারকারীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা যায়। ডকুমেন্ট, স্প্রেডশীট, ভিডিও ক্লীপ ও অন্য অ্যাপলিকেশন ডাটা সহজে ব্যবহার করা যায়।
এইচটিএমএল ভাষার নির্দিষ্ট কতকগুলো ট্যাগ ব্যবহার করে ওয়েব পেজ তৈরি করা হয়। ওয়েব পেজ তৈরির প্রধান দুইটি অংশ থাকে। যথা-
- হেড (Head) অংশঃ প্রতিটি এইচটিএমএল ডকুমেন্টের টাইটেল বা শিরোনাম, ধরন, সার্চ ইঞ্জিনের জন্য কী ওয়ার্ড বা প্রয়োজনীয় কোড যা ওয়েব পেজের তথ্য প্রদর্শনের জন্য ব্যবহার করা হয়।
- বডি (Body) অংশঃ এটি হলো ওয়েব পেজের মূল কন্টেন্ট এরিয়া। এর মধ্যে এক বা একাধিক কন্টেন্ট ব্যবহার করে সংরক্ষণ করা হয়।
HTML এর সুবিধা
- এইচটিএমএল লেখা হয় ট্যাগ ব্যবহার করে। প্রয়োজনীয় কিছু ট্যাগ মনে রেখে যে কেউ সহজে ওয়েব পেজ তৈরি করতে পারে।
- প্রায় সকল ব্রাউজার এইচটিএমএল সাপোর্ট করে। এর ফলে খুব সহজেই এইচটিএমএল দিয়ে তৈরি করা ওয়েবসাইট ব্রাউজ করা যায়।
- এইচটিএমএল কার্যকরভাবে প্লাটফর্ম স্বনির্ভর সমন্বয়। বর্তমানে এইচটিএমএল এর ৫ম সংস্করণ নিয়ে কাজ চলছে।
- একটি টেক্সট এডিটর সফটওয়্যারের (যেমন Notepad, Wordpad, Fornt Page ইত্যাদি) ব্যবহার করে সহজে এইচটিএমএল প্রোগ্রাম লিখা যায়।
- এইচটিএমএল কার্যকরভাবে প্লাটফর্ম স্বনির্ভর হওয়ার ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (WWW) ডকুমেন্টের বিভিন্ন ধরনের উপাদান ও উপকরণ তৈরি করা যায় যার সমন্বয়ের মাধ্যমে।
- এটি শেখা ও ব্যবহার পদ্ধতি খুব সহজ।
- এইচটিএমএল দিয়ে তৈরি করা ওয়েবসাইট রক্ষণাবেক্ষণ করা সহজ।
- এইচটিএমএল দিয়ে তৈরি করা ওয়েবসাইট এর সাইজ কম থাকে বিধায় এটি ব্যয় সাশ্রয়ী।
- এইচটিএমএল দিয়ে তৈরি করা ওয়েবসাইট পূর্ব থেকে কম্পাইল করা থাকে বিধায়, দ্রুত গতিতে পেজগুলো ব্রাউজারে লোড হয় অর্থাৎ ইউজার এর নিকট প্রদর্শিত হয়।
- এইচটিএমএল ডকুমেন্টের হাইপারলিংকে ক্লিক করার মাধ্যমে অন্য ডকুমেন্ট সহজে যাওয়া যায়।
- এইচটিএমএল এর ফর্মের সাহায্যে ব্যবহারকারীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
- ডকুমেন্ট স্প্রেডশীট, ভিডিওক্লিপ ও অন্য অ্যাপ্লিকেশনের ডাটা সহজে ব্যবহার করা যায়। যে সব ওয়েবসাইটে ডাটাবেজ এর দরকার নেই সেগুলো শুধু html code দিয়ে সম্পূর্ণরূপে তৈরি করা সম্ভব।
HTML এর অসুবিধা
- এইচটিএমএল এর সাহায্যে ডাইনামিক পেজ তৈরি করা যায় না। সাধারণত স্ট্যাটিক পেজ তৈরির ক্ষেত্রে এটি ব্যবহৃত হয়।
- এইচটিএমএল এর সাহায্যে ওয়েব পেজ তৈরিতে অনেক বেশি কোড লিখতে হয়।
- এইচটিএমএল এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে দুর্বল।
- যে সব ওয়েবসাইটে ডাটাবেজ দরকার হয় সেখানে শুধু html code সম্পূর্ণরূপে তৈরি করা সম্ভব না।
HTML এর কিছু অসুবিধা থাকলেও এর প্রচুর সুবিধা রয়েছে যে কারণে HTML বর্তমান বিশ্বে খুবই জনপ্রিয়। ” HTML কি “এই বিষয়ে যে কোন ধরণের প্রশ্ন থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাতে পারেন। পরবর্তীতে HTML ট্যাগ ও সিনটেক্স নিয়ে আলোচনা করা হবে সে পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকবে।
আল্লাহ্ হাফেজ…
Helpful post
Great blog!