৫ তারিখের জার্নাল থেকে, অনেকটা ক্লান্তি আর অবসাদ নিয়ে আরো কিছুদূর চললাম। তারপর ঝর্ণার শব্দ কানে এলো। শব্দেই ঝর্ণার তেজের আন্দাজ পেলাম। আরেকটু এগোতেই ঝর্ণা যখন দেখতে পেলাম, সব ক্লান্তি আর অবসাদ নিমেষেই দূর হয়ে গেলো। তার বদলে জায়গা করে নিলো মুগ্ধতা। এত সুন্দর ঝর্ণা! তেজ এত বেশি যে ঝর্ণার পানি ধোঁয়ার মত হয়ে যায়, ধুপপানি নামটা বোধহয় এই কারণেই। তবে সবচেয়ে রোমাঞ্চকর দৃশ্য এটাই ছিলো না। ঝর্ণার তেজি পানির দেয়ালের পেছনে একটা গুহার মত ছিলো জানতাম। সামনে থেকে সেটা দেখা যায় না। একদমই না। কিন্তু সেখান থেকে দৃশ্যটা আরো অনেক বেশি রোমাঞ্চকর হবার কথা। সবাই একটু সংশয়ে ছিলাম।
আজকের ঝর্ণার তেজটা খুবই খুবই বেশি। একটু কাছে গেলেই কিছু দেখা যায় না। তবু আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আমি যাব। কিছু না ভেবেই ঝর্ণার মুখ বরাবর হাঁটতে শুরু করলাম। যত সামনে এগোচ্ছি ততই যেন অন্ধ হয়ে যাচ্ছি। চোখে শুধু পানির সাদা রঙ ছাড়া কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। ধীরে ধীরে একদম ঝর্ণার কাছে চলে এলাম। ঝর্ণার পানি সরাসরি আমার গায়ে পড়ছিলো। মনে হচ্ছিলো আমার গায়ে পাথর পড়ছিলো। আর চোখে তো সাদা রঙ ছাড়া কিছুই দেখছিলাম না। ঝর্ণার পানির পেছনে হাতড়ে একটা গর্তের মত পেলাম উপরের দিকে। আন্দাজ করে করে সেই গর্ত বেয়ে উপরে উঠতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু গর্ত ছিলো প্রচন্ড পিচ্ছিল, চোখেও কিছু দেখছিলাম না, ঝর্ণার পানিও আমাকে ঠেলে নিচে ফেলে দিচ্ছিলো। বারকয়েক পড়ে গেলাম। পা ছিলে গেলো। হাল ছাড়লাম না। আরো দৃঢ়ভাবে চেষ্টা করলাম, তারপর সবকিছুকে পেছনে ফেলে ঢুকে গেলাম সেই গুহায়। কখন যে অকিব আর শামিমা আমার পেছনে চলে এসেছিলো খেয়ালই করিনি। ওদেরও ধরে উঠালাম। তারপর কয়েক মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে বসে রইলাম। যেন কী অনুভব করা উচিত বুঝতে পারছিলাম না।
ধীরে ধীরে সবাই ভেতর চলে এলো। আমরা সবাই একেকদিকে গুহায় বসে আছি। কেউ শুয়ে আছে, কেউ চুপ করে আছে, কেউ মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সবার দৃষ্টি প্রবহমান ঝর্ণার দিকে। ঝর্ণা একটা দেয়ালের মত হয়ে গেছে। সবাই মুগ্ধ হয়ে সেই দেয়ালের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি কেমন একটা অপার্থিব সুখের অনুভূতি অনুভব করলাম। সেই অনুভূতি ১৪ জন মানুষের সম্মিলিত অনুভূতি।
আশা করি ভালো লেগেছে। এরকম ছোট ছোট আর্টিকেল পেতে TechBartaBD-র সাথেই থাকুন।
আল্লাহ হাফেজ…
ok, sathei achi, pore valo legeche